বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের একটি কারেকশনের চেষ্টা করা হয়েছিল এবং তারপর মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট চালিয়ে যাওয়ারও প্রচেষ্টা চালানো হয়। বাস্তবে, কোনো প্রচেষ্টাই সঠিকভাবে সফল হয়নি, তবে এটি স্পষ্ট যে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনও অব্যাহত রয়েছে, যেমনটি আগেই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। এই পেয়ারের মূল্য বর্তমানে 2 বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লেভেলের কাছাকাছি অবস্থান করছে, এবং ইউরোর দরপতন শেষ হওয়ার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আমরা এখনও মনে করি যে, ইউরোর দরপতন অব্যাহত থাকবে। ক্রিসমাস এবং নববর্ষের সময় মার্কেটে এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা প্রায় শূন্যে নেমে যেতে পারে, যা কয়েক সপ্তাহের জন্য মূল্যের স্বাভাবিক মুভমেন্টকে বিলম্বিত করতে পারে, তবে এটি সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাবে না। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং ফেডারেল রিজার্ভের সাম্প্রতিক বৈঠকগুলোর ফলে কেবল এই ধারণাকে আরও জোরালো করেছে যে ইসিবি আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করার জন্য প্রস্তুত, যেখানে ফেড খুব ধীরগতিতে এবং ট্রেডারদের প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম মাত্রায় আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করবে। তদুপরি, মার্কেটের ট্রেডাররা ইতোমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভবিষ্যৎ নীতিমালা নমনীয় করার বিষয়টি মূল্যায়ন করেছে, ফলে মার্কেটে শুধুমাত্র ইইউ-এর সুদের হার হ্রাসের প্রভাব পড়বে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বৃহস্পতিবার 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে একটি মাত্র ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। রাতের বেলা, মূল্য 1.0334-1.0359 এরিয়ার কাছ থেকে বাউন্স করে প্রায় 1.0433-1.0451 জোনে পৌঁছায়। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনের শুরুতে নতুন ট্রেডাররা লং পজিশনে এন্ট্রি করতে পারত, এবং এই ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করলে সেটি লাভজনক হত।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে একটি হরাইজন্টাল চ্যানেলের মধ্যে EUR/USD পেয়ারের ট্রেড করা হচ্ছিল, তবে ফেডের বৈঠকের ফলাফল মার্কেটে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং ফ্ল্যাট প্যাটার্নের সমাপ্তি ঘটে। আমরা মনে করি যে এখন ইউরোর দরপতন পুনরায় শুরু হয়েছে। আগামী ছুটির সপ্তাহগুলোতে মার্কেটে নতুন করে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, তবে এটি শুরু হওয়ার কোন সংকেত এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।
শুক্রবার যদি মূল্য 1.0334-1.0359 এরিয়া অতিক্রম করে নিচের দিকে যায়, তবে এই পেয়ারের দরপতন অব্যাহত রাখতে পারে। আজ ফ্ল্যাট মুভমেন্টের সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বেশি, তাই ট্রেডারদের অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হল: 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896।
শুক্রবার ইউরোজোনে কোন উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে যেগুলোকে গুরুত্বের দিক থেকে গৌণ হিসেবে বিবেচনা করা যায়, যার মধ্যে রয়েছে PCE সূচক এবং কনজিউমার কনফিডেন্স বা ভোক্তা আস্থা সংক্রান্ত পরিসংখ্যান।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।